২০১১ সালে চীনা টেক জায়ান্ট টেনসেন্ট তৈরি করে এ অনলাইন ম্যাসেজ প্লাটফর্ম। বর্তমানে উইচ্যাটের ব্যবহারকারী ১শ’ কোটির ওপরে। এখন এই উইচ্যাটই একসাথে ১০ লাখ সার্ভিস দিতে পারবে অনেকগুলো মিনি প্রোগ্রামের মাধ্যমে। থার্ড পার্টি কোম্পানির তৈরি ছোট ছোট অ্যাপগুলো উইচ্যাটের মাধ্যমেই পরিচালনা করা যাবে।
এখন গ্রাহককে খাবার অর্ডার দিতে কিংবা ট্যাক্সি ডাকতে উইচ্যাটের ভার্চুয়াল জগত ছেড়ে আসার কোন প্রয়োজন পড়বে না। বেশিরভাগ সার্ভিসই শুধু চীনে চালু আছে, এ কারণে উইচ্যাটের আধিপত্য এতোটা চোখে পড়েনি বাইরের জগতের।
আরেকটি অ্যাপ আছে, যেটির মাধ্যমে একের ভেতর ১শ’ সার্ভিস পাওয়া যাবে, সেটি অ্যান্ট গ্রুপের আলিপে। আলিপে’র ব্যবহারকারী ১শ’ কোটির বেশি, পরিচালনা করা যায় ১ লাখ ২০ হাজার প্রোগ্রাম।
উইচ্যাটের গ্রাহকদের ধরে রাখতে নতুন এই আইডিয়া মাথায় এসেছে চীনা উদ্যোক্তা অ্যাঞ্জেলিন লিউ ও অ্যাঞ্জি লিউয়ের মাথায়। তারা বলেন, উইচ্যাট তাদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। তারা দিনে গড়ে ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় কাটান উইচ্যাটে। তারা জানান, এই অ্যাপের মাধ্যমে পণ্য অর্ডার করা যাবে, বিলও পরিশোধ করা যাবে।
কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা টেলিভিশনে তারা কোন বিজ্ঞাপন দেননি প্রচারের জন্য। এরপরও এই অ্যাপের প্রচার ও প্রসার হচ্ছে, ব্যবহার বাড়ছে। আয় হচ্ছে কোটি কোটি ডলার।
ইন্টারনেটের যুগে চীনের মানুষকে খুব সহজেই নিয়ে গেছে চীন সরকার। এ কারণে চীনা কোম্পানিগুলো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আনতে পেরেছে, যেগুলোর কথা পশ্চিমা বিশ্ব ভাবতেও পারেনি। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি চীন বরাবরই শিথিল। চীন এমন ফিচার তৈরির চেষ্টা করছে, যেন গ্রাহকের পুরো জীবনই অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ে।
তবে অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভরতা মানে অনেক বেশি লেনদেন এবং তথ্যের আদান প্রদান। এক্ষেত্রে দেশ কিংবা দেশের বাইরে, গ্রাহকদের স্বার্থে প্লাটফর্ম নিরাপদ রাখার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের। এক্ষেত্রে টেসনেন্ট সতর্ক ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণেই দেশের বাইরে প্রসারিত হতে পারছে না চীনের অ্যাপগুলো। কিন্তু চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারই এতো বিশাল যে, অন্য কোন দেশের ওপর নির্ভর করতে হয় না চীনকে।
এদিকে, আগামী সুপার অ্যাপ তৈরির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ। এরমধ্যে গ্র্যাব, গোজেক আর সি গ্রুপে অর্থায়ন করেছে আলিবাবা, টেনসেন্টের পাশাপাশি মার্কিন কোম্পানি ফেইসবুক, গুগল আর পেপাল। ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক কোম্পানি গোজেক মোটরসাইকেল প্লাটফর্ম থেকে এমন একটি অ্যাপ অফার করেছে, যেখানে গাড়ি সার্ভিস, পেমেন্ট, খাবার ডেলিভারি কিংবা পার্লার সেবা মিলবে। গোজেক কর্তৃপক্ষ বলছে, এক অ্যাপের মধ্যে সব সেবা পেতে মানুষ খুব আগ্রহী।