বরিশাল বার্তা
  • হোম
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব সংবাদ
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • ক্যাম্পাস
  • চাকুরী বার্তা
  • অন্যান্য খবর
বরিশাল বার্তা
  • বিশ্ববার্তা
  • মোবাইল অ্যাপ
  • যোগাযোগ
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের শুরু ও শেষ

কুখ্যাত খুনী এরশাদ শিকদার—যার নাম শুনলে লোকে ভয়ে, ঘৃণায় আঁতকে ওঠে এখনো।

বরিশাল বার্তা ডেস্ক
2019/07/24
ক্যাটাগরি ক্রাইম বার্তা
World Barta

এরশাদ শিকদার কিছু মানুষ আছেন যাদের পরিচয় করিয়ে দিতে তাদের কাজের বিবরণ দিতে হয় না। নামই হয়ে ওঠে তাদের কাজের বিবরণ, শুনলেই লোকে বুঝে ফেলে তিনি কে এবং তার কাজ কী।

একজন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব এমন কোনো অপরাধ নেই যা সে করেনি। খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণসহ নির্যাতনের সকল শাখায় ছিল তার অবাধ বিচরণ। মানুষহত্যার ক্ষেত্রে এরশাদ শিকদার মাঝেমাঝে এমন সব উপায় অবলম্বন করত যা শুনলে যে কোনো মানুষ ভয়ে কেঁপে উঠবে। কিন্তু এরশাদ শিকদার তা করত হাসিমুখে।

কাউকে হত্যা করার জন্য নির্মমভাবে আঘাত করার পর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বুকের পাঁজরের ওপর উঠে নাচতে থাকা ছিল যার প্রিয় শখ, রক্তের পিপাসা মিটিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে নেওয়া ছিল যার প্রিয় অভ্যাস, সেই এরশাদ শিকদারের কথাই বলছি। শুধু তাই নয়, এরপর নিজেকে বিনোদিত করার জন্য আয়োজন করত জলসার। নাচ গানে ভরপুর সেই জলসায় আবার শরিক হতো ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ, যাদের ছত্রছায়াতেই একজন ছিঁচকে চোর থেকে বিশ্বের সেরা দশজন ‘সিরিয়াল কিলারের’ একজন হিসেবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ পায় এরশাদ শিকদার। জলসায় সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে থাকত এরশাদের নিজের কণ্ঠে গাওয়া গান—‘আমি তো মরে যাব চলে যাব রেখে যাব সবই…’

বিজ্ঞাপন

এরশাদ শিকদারের উত্থান যে কোনো সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। এজন্যেই হয়তো নিজে একবার হলেও একটি ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিল এরশাদ। শোনা যায় একজন পরিচালককে তিনি প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়েছিলেন তাকে সিনেমায় ভিলেন হিসেবে নেওয়ার জন্য। কিন্তু বাস্তবে যে এত বড় ভিলেন তার আসলে সিনেমার সাহায্যের দরকার পড়ে না। প্রকৃতিও তাকে তাই সেই সুযোগ দেয়নি।

এরশাদ শিকদারের জন্ম ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মাদারঘোনা গ্রামে। তার পিতার নাম বন্দে আলী। জন্মের পর থেকেই দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে করে বেড়ে ওঠা তার। অল্প বয়সেই পিতৃবিয়োগ। এরপর সংসারের হাল ধরেন তার মা। অন্যের বাসায় কাজ করে কোনোমতে দিনাতিপাত করতেন তিনি। অন্যদিকে এরশাদ ছোটবেলা থেকেই ছিল ডানপিটে। ছোট ছোট চুরি, মারামারি এসবের বিচার প্রায়ই আসত তার মায়ের কাছে। তবুও সে থামত না। সারাদিন টইটই করে ঘুরে বেড়াত সারা গ্রামে।

 একদিন বাসায় এসে এরশাদ এমন একটি দৃশ্য দেখতে পায় যা কোনো ছেলের পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। এলাকার একজন প্রভাবশালী লোককে মায়ের সাথে খুবই অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে এরশাদ। তখন সে কিছুই করতে পারেনি। কে জানে এই ঘটনার প্রভাবেই কিনা পরবর্তী জীবনে অসংখ্য নারীকে বানিয়েছে ভোগের পণ্য। এমনকি তার নিজের ঔরসজাত কন্যা সন্তানও তার লালসার শিকার হয়।

দেখতে শুনতে এরশাদ ছিল সুদর্শন। এজন্যেই যখন সে নিজ গ্রাম ছেড়ে জীবিকার জন্য ছুটে যায় খুলনার ঘাট এলাকায় আর কুলির কাজের পাশাপাশি শুরু করে ছোটখাট চুরি বাটপারি, তখন সবাই তাকে ‘রাঙ্গা চোর’ নামে ডাককে শুরু করে। আঞ্জু সরদার নামে এক কুলির সর্দার তাকে সমকামিতায় বাধ্য করে। পরবর্তীতে এই আঞ্জু সরকারকে ব্যবহার করেই ট্রলার থেকে মাছ আর গম চুরি এবং জাহাজ থেকে তেল চুরির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে হাত পাকায় এরশাদ। আর এভাবেই এককালের ‘রাঙ্গা চোর’ একদিন ভয়ঙ্কর খুনী হয়ে ওঠে।

এরশাদ শিকদারের জীবন কাহিনী কোনোভাবেই সিনেমার চেয়ে কম নয়। বরং তার বর্বরতা এবং নৃশংসতা কখনো সিনেমার নির্মম কাহিনীকেও হার মানায়। তার রাঙ্গা চোর থেকে এরশাদ শিকদার হয়ে ওঠা গল্পটাও যেন কোনো সুদক্ষ স্ক্রিপ্ট রাইটারের হাতেই লেখা।

মাছ, গম কিংবা তেল চুরি করে তার পোষাচ্ছিল না। ১৯৭৬-৭৭ সালের দিকে এরশাদের নতুন সঙ্গী হলো একটা রামদা। এটা নিয়ে সে শুরু করল ছিনতাই। বেশ কয়েকজন সঙ্গীও জুটে গেল। অপরাধের একটা সার্কেল তৈরি হলো। বার্জ-কার্গো থেকে পণ্য চুরি করে নদীতে লাফিয়ে পড়া, রেললাইনের স্লিপার চুরি, কাঠ চুরি, রেলের ওয়াগন ভাঙা, ট্রলারে চাঁদাবাজি ইত্যাদি শুরু হয়ে গেল পুরোদমে। যে-ই প্রতিবাদ করছিল তার কপালেই জুটছিল রামদার কোপ। ধীরে ধীরে পুরো ঘাটে ছড়িয়ে পড়ল একটি নাম—এরশাদ শিকদার।

এরশাদ শিকদারের গল্প বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে টেনে আনা বাতুলতা। তবুও রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জীবনের সাথে যেভাবে মিশে আছেন তাতে তাকে ছাড়া চলাও মুশকিল। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন “পেয়ে পাওয়া ফুরায় না, বরং চাওয়া বেড়েই ওঠে।” এরশাদের হয়েছিল এই অবস্থা। সময়টা ১৯৮২। এক এরশাদ ঘাটের রাজা, কাকতালীয়ভাবে আরেক এরশাদ তখন দেশের রাজা। বিচক্ষণ এরশাদ শিকদার নিজের ক্ষমতার পরিধি বৃদ্ধির জন্য রাজনীতিতে যোগ দেয়।

১৯৮৮ সালে এক ভোটারবিহীন নির্বাচনে সে হয়ে যায় তৎকালীন ২১ নাম্বার, বর্তমানে ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের কমিশনার। ব্যাস, তাকে আর কে আটকায়। চলতে থাকে একে একে জায়গা দখল। রেলের জায়গা, ব্যাংকের জায়গা, বিমানের জায়গা দখল করে গড়ে তোলে প্রায় ৬০ হাজার লোকের জন্য একটি বস্তি। যে লোকগুলো হয়ে ওঠে এরশাদের নিত্যদিনের নানান অপরাধের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সঙ্গী।

এভাবে এরশাদ হয়ে উঠতে লাগল ওই অঞ্চলের অপরাধ জগতের একচ্ছত্র অধিপতি। বাড়তে লাগল শত্রু, বাড়তে লাগল রক্ত পিপাসা। যে বা যারা বিরোধিতা করতে চাইল, তাকেই হত্যা করা হলো নির্মমভাবে। এই যেমন ইনসাফ, কামাল ও খালেক নামের তিন নৈশপ্রহরী একবার এরশাদের চোরাচালানের কিছু মালামাল ধরিয়ে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। কী সাহস! ক্ষিপ্ত এরশাদ বাঘের মতো হামলে পড়ল তাদের ওপর। একেকজনকে মাটিতে ফেলে বুকের ওপর লাফাতে লাগল এরশাদ। অবিরাম আঘাতে পাঁজর ভেঙে দেওয়া হলো তাদের। তারপর গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হলো। একজন এই ঘটনা দেখে ফেলেছিল বলে তাকেও বরণ করতে হলো একই পরিণতি! কী নৃশংস!

এরশাদের প্রিয় নদী কোনটা এ ব্যাপারে ইতিহাসে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে অনুমান করে হয়তো নেওয়া যায় সেটা ভৈরব নদীই হবে। কেননা এখানেই খুন করে ফেলে দিয়েছে কত মায়ের সন্তানকে তার কোনো সঠিক হিসেব এরশাদ শিকদারের কাছেও ছিল না।

অপরাধ চালিয়ে যেতে হলে রাজনীতির বিকল্প নেই, একথা বুঝতে এরশাদের দেরি হয়নি। তাই তো ৯০-এর পর রাষ্ট্রপতি এরশাদকে হটিয়ে যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন এরশাদও বিএনপিতে নাম লেখায়। এরপরে ৯৬ সালে নতুন সরকার পরিবর্তন হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেও যোগ দিতে সক্ষম হয় এরশাদ। পাশাপাশি চলতে থাকে তার হত্যাযজ্ঞ। কী বন্ধু, কী শত্রু, কাউকেই রেহায় দেয়নি এরশাদ।

 শুধুমাত্র সন্দেহের জেরেও সে খুন করে ফেলে মাস্টার জাহাঙ্গীর কিংবা ফটিকের মতো পারিবারিক বন্ধুকে। যারা নিয়মিত বাসায় আসা যাওয়া করত বলে এরশাদের ধারণা হয়েছিল সম্ভবত তার স্ত্রীর সাথে এদের কোনো গোপন সম্পর্ক আছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে হতভাগা লোকটির নাম সম্ভবত আকিমুল।

 ঝিনাইদহের টেলিফোন অপারেটর ছিল আকিমুল। একরাতে টেলিফোনের ডায়াল ঘোরাতে ঘোরাতে, দৈবক্রমে সে ফোন করে ফেলে এরশাদের বাসায়। আর কই যায়! এরশাদের স্ত্রী খাদিজার সাথে ফোনালাপ এবং ফোনে প্রেম করার অপরাধে আকিমুলেরও স্থান হলো ভৈরব নদীতে।

মানুষ মারার জন্য এরশাদ আলাদা জায়গা বানিয়েছিল। আফ্রিকান মাগুরের একটি পুকুর ছিল তার। জ্যান্ত মানুষ সেখানে ছেড়ে দিলে মিনিট পাঁচেক সময় লাগত উধাও হয়ে যেতে। বরফকল ছিল মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে তার আরকটি কুখ্যাত জায়গা। এখানে যে একবার গেছে, তার আর সহজে ফিরে আসা হয়নি।

এরশাদ শিকদারের অপরাধ জীবনের সবচেয়ে আলোচিত খুনের ঘটনা ছিল যুবলীগ নেতা খালিদ হত্যা। এই হত্যার ঘটনায় করা মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল এই নরপিশাচকে। ১৯৯৯ সালের একরাতে ফোন করে তার বরফকলে যাওয়ার জন্য কয়েকজনকে ডাকে এরশাদ। তার ডাকে সাড়া না দিয়ে উপায় নেই। 

খুলনা জেলা ছাত্রলীগ নেতা অসিত বরণ বিশ্বাস, আবু হানিফ, আলী আকবর। সাথে ব্যবসায়ী সৈয়দ মনির মীর ও তার ছোট ভাই চয়ন মীর আর যুবলীগ নেতা খালিদ হোসেন তাই রওয়ানা হন মৃত্যুকূপ বরফকলের দিকে। তারা গিয়ে পৌঁছুনোর পর কথাবার্তার একপর্যায়ে এরশাদ অট্টহাসি শুরু করে। এ যেন ঝড়ের আগে প্রকৃতির কঠিন পূর্বাভাস। ভয়ে কলিজার পানি শুকিয়ে যায় সবার।

এরশাদ খালিদকে টেনে হিঁচড়ে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। রক্ত পিপাসা তখন চরমে। বুকের ওপর লাফ দিয়ে উঠে যায় এরশাদ। লাফাতে লাফাতে বুকের পাঁজর ছিন্নভিন্ন করে ফেলে সে। খালেদ ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে।

এ যাত্রা আর রক্ষা হয় না এরশাদের। মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। ভারত থেকে বিশেষ নকশা করিয়ে আনা এরশাদের আবাসস্থল স্বর্ণকমলে অবস্থান করছিল এরশাদ। এমন সময় খবর আসে পুলিশ তাকে ধরতে আসবে। এরশাদ পালাতে গিয়েও সিদ্ধান্ত বদলায়। সে সবাইকে তার ক্ষমতার জোর দেখিয়ে দিতে চাইল। সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজেই চড়ে বসল ভ্যানে।

২০০০ সালের ৩০ এপ্রিল খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক এম হাসান ইমাম এরশাদ শিকদারের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করলেন। ২০০৪ সালের ১০ মে রাত ১২টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হলো দেশের ইতিহাসে কুখ্যাত এই ঘাতকের। এরশাদ ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল মৃত্যুর দিকে। পেছনে পড়ে রইল তার সকল কুকর্ম, পুলিশ এলেই লুকিয়ে থাকার জন্য খেলনা কবর, পড়ে রইল তার শত্রদের ফাঁসি দেওয়ার সেই ঘর। পড়ে রইল তার নিজের গাওয়া গান, “আমি তো মরে যাবো…”

সত্য মিথ্যার, ন্যায় অন্যায়ের লড়াইটা আজকের নতুন না। এই লড়াই চলে আসছে পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে। যতদিন মানুষ থাকবে, পৃথিবী থাকবে, এই লড়াইও থাকবে। মিথ্যা, অন্যায় হয়তো সাময়িকভাবে বিজয়ের মালা পরতে পারে, কিন্তু সবশেষে সত্য এবং ন্যায়েরই জয় হয়। এরশাদ শিকদারের উত্থান ও পতন এই কথারই প্রমাণ দিয়ে গেল আরেকবার।

পুনম পান্ডের সেক্স ও পর্নো কেলেঙ্কারি!

বিজ্ঞাপন
পূর্ববর্তী পোস্ট

বরগুনা জেলার পরিচিতি ও দর্শনীয় স্থান সমূহ!

পরের পোস্ট

রেল আসছে বরিশালে, থাকবে ১২টি স্টেশন

পরের পোস্ট
রেল আসছে বরিশালে, থাকবে ১২টি স্টেশন

রেল আসছে বরিশালে, থাকবে ১২টি স্টেশন

বিজ্ঞাপন

বরিশাল বার্তা

Publisher & Editor  H M Bayjid Bustami

Call  +8809638387766 or +8801991807060
eMail  [email protected]
Organization by  AmraSobai Foundation

 world_barta_google_news world_barta_youtube world_barta_telegram world_barta_facebook world_barta_twitter

No Result
View All Result
  • হোম
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব সংবাদ
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • ক্যাম্পাস
  • চাকুরী বার্তা
  • অন্যান্য খবর

Sponsor by AmraSobai