দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান-সাবেকসহ ৪ হাজার ১৫৭ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে তাদের বাবা-মা এবং সন্তানরাও রয়েছেন। আক্রান্তদের বেশির ভাগই সাবেক সদস্য। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ জন সদস্য মারা গেছেন। এর মধ্যে তিনজন চাকরিরত ছিলেন।
ওই তিনজনের মধ্যে দুইজন সৈনিক ও একজন মেসওয়েটার। মারা যাওয়া দুই সৈনিক সড়ক দুর্ঘনায় আগে থেকে সংকটপূর্ণ অবস্থায় ছিলেন। ১৮ জুন, বৃহস্পতিবার সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন চট্টগ্রামের ভাটিয়ারির মিলিটারি প্যারেড গ্রাউন্ডে ৭৮তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্স এবং ৫৩তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
এ বিষয়ে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীতে আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে ঢাকা, নবম পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন জাজিরা ক্যান্টমেন্ট ও চট্টগ্রাম সেনানিবাসে দায়িত্বর সৈনিকরা বেশি। অন্যান্য জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা কম। করোনা মেকাবেলায় আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এখন পর্যন্ত যে চাকরিরত যে তিন সদস্য মারা গেছেন তাদের মধ্যে দুই সৈনিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিলেন। হয়ত শেষ স্টেজে গিয়ে তারা করোনায় আক্রান্ত হন। এমনিতেই তাদের দু’জনের ফিরে আসা দূরহ ছিলো।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রত্যেকটি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন বসানো হয়। আমাদের পর্যাপ্ত টেস্টিং কিট রয়েছে। আমাদের টেস্ট করানোর জন্য অন্য কোথাও যেতে হয় না। কর্মরত, সাবেক সেনা সদস্য ও তাদের পরিবারের কোনো সদস্য যখনই আসে তখনই আমরা করোনার টেষ্ট করাচ্ছি। এই সুযোগ আমরা নিশ্চিত করেছি। পর্যাপ্ত মেশিন কেনা হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নের মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত টেস্টিং কিট বিদেশ থেকে আমরা আনছি। ১৫-২০ দিন পরপরই আমরা কিট আনা হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত কিট রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক সেনানিবাসে প্রত্যেক সৈনিকের জন্য প্রটেকটিভ ম্যাজারস আমরা নিয়েছি। তারপরও আক্রান্ত হচ্ছে। এটা অস্বাভাবিক নয়। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি চাকরিরত সেনা সদস্যদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকে।
সেনা প্রধান বলেন, করোনা মোকাবেলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে সরকার সেনাবাহিনীকে যে দায়িত্ব দেবে সেটা পেশাদারিত্বের মধ্য দিয়ে আমরা পালন করে আসছি। এখনো করছি, ভবিষ্যতেও করবো।
বাংলা/এনএস