রক্তমাখা জামা-কাপড় পরেই পালিয়ে বেড়ান তালেবের হত্যাকারীরা। বগুড়ার আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের জট খুলেছে পুলিশ। এরপর পরই এমন তথ্য উঠে অসে। ১৯ জুন, শুক্রবার রাতে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
এছাড়াও ওই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ওই দুই গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চান মিয়া (২১)। তিনি শহরের আকাশতারা মধ্য পাড়ার বাসিন্দা। অপরজন একই এলাকার বাসিন্দা বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পা (২২)।
এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, সামান্য মান-অভিমানের ঘটনা নিয়ে গত ১৪ জুন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে তালেবকে খুন করেন চান মিয়া ও বাপ্পা। এ সময় তাদের জামা-কাপড়ে রক্ত লেগে যায়। ওই রক্তমাখা জামা কাপড় না পাল্টিয়েই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তারা। পরে বগুড়া শহরতলীর বারপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শহরের বারপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিনের জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়- মামলার আসামিরা একসঙ্গে চলাফেরা করেন। তারা প্রায় সময় বার্মিজ চাকু বহন করেন। মামলার ১ নম্বর আসামি ফিরোজ ওরফে ফোকরার সঙ্গে খুন হওয়া তালেবের পূর্বে ভাল সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। চাঁন এবং বাপ্পার সঙ্গেও তালেবের সম্পর্ক ভাল ছিলো না। তালেব বিভিন্ন সময়ে তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে ডাকলেও তারা যেতেন না।
তিনি আরো জানান, ওই ঘটনার দিন এই তিনজন ঘটনাস্থলের পাশে আইয়ুবের দোকানে পান খাচ্ছিল। এমন সময় তালেব একটা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে আসেন। মোটরসাইকেল থেকে নেমে তিনি চাঁনকে ডাক দিলে তিনজনই এগিয়ে যান। তালেব চাঁনকে জিজ্ঞেস করেন- ‘কিরে, কথা শুনিস না কেন, বেশি সেয়ানা হয়ে গেছু? এমন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চাঁন চাকু বের করে তালেবের বুকে আঘাত করলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পেছন থেকে তিনজনই তালেবকে এলোপাথারি ছুরি মারতে থাকেন। তালেব মাটিতে পড়ে যাবার পরেও তারা মারতে থাকেন। এ সময় ফিরোজের চাকুর আঘাতে তালেবের শ্বাসনালী প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তাদের নিজেদের এলোপাথারি কোপে চাঁনের ডান হাতের কনে আঙ্গুল এবং ফিরোজের ডান কনুই কেটে যায়। ঘটনায় জড়িত অপর আসামি ফিরোজ ওরফে ফোকরাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।
এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) সনাতন চর্কবর্তী জানান, অপরাধ করে বগুড়া জেলা পুলিশের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে না। আগে হোক বা পরে ধরা পড়তেই হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুন রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাবগ্রাম বাজার ইউনিট যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেবকে (৩৫) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার পরদিন নিহত তালেবের স্ত্রী বাদি হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়।
বাংলা/এনএস
আপনার মন্তব্য লিখুন