প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে ভেঙে পড়েছে অর্থনীতির চাকা। এতে করে দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষদের সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন মধ্যবিত্তরাও। কর্মহীন হয়ে পড়ায় ঢাকা ছাড়ছেন এসব মানুষ। এ কারণে রাজধানীর বাসা মালিকরাও পড়েছেন ভাড়াটিয়া সংকটে, বেড়েছে দুশ্চিন্তা।
তেমনিই একজন সত্তরোর্ধ্ব বাসা মালিক ফাতেমা কানিজ। তিনি প্রাইমারি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বাড়ি ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ নিয়েই সাতজনের পরিবার চালান তিনি। রাজধানীর জাফরাবাদে চারতলা ভবনের চারটি ফ্ল্যাট ও পাঁচটি টিনের ঘর ভাড়া দিয়েছেন তিনি।
করোনাকালে তার একটি ফ্ল্যাট গত তিনমাস ও আরেকটি একমাস যাবৎ খালি। নতুন কোনো ভাড়াটিয়া আসে না। এছাড়াও তার টিনের ঘরগুলোর ভাড়াটিয়ারা গত ফেব্রুয়ারি থেকেই কেউই ভাড়া দেননি। আর বাকি ভাড়াটিয়ারা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভাড়া দিয়েছে।
এ বিষয়ে ফাতেমা কানিজ বলেন, ‘কিছুদিন আগেই আমাকে ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ৯০ হাজার টাকা ইউটিলিটি বিল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে।’
একই অবস্থা মিরপুর-১১’র বাড়িওয়ালা আতিকুন নাহারের। তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেসব ভাড়াটে থাকতে চান তাদের জন্য অন্তত ২০ শতাংশ ভাড়া কমিয়ে দেবো। কেননা এই মুহূর্তে ভাড়াটিয়া চলে গেলে নতুন ভাড়াটিয়া পাওয়া খুব কঠিন হবে।’
মহামারীকালে অনেক নিম্নবিত্ত মানুষকে ঢাকার বাইরে গিয়ে কম ভাড়ার বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দিনদিন আরো খারাপ হচ্ছে। তাই বাড়িওয়ালারা খুব কঠিন সময় পার করছেন। কারণ এ সময়ে কেউই বাসা ভাড়া নিতে চাইছেন না। ঢাকার মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া ও রায়েরবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা দিয়েছে অসংখ্য বাড়ির দরজায় টু-লেট নোটিস ঝুলছে।
তবে অনেক বাড়িওয়ালা তাদের আর্থিক সঙ্কটের অবস্থা নিয়ে কথা বলতে চাননি। আবার অনেকেই তাদের দূরবস্থার কথা বলেছেন। ভাড়াটিয়া থাকুক বা না থাকুক তাদের প্রতিমাসেই ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।
রিয়েল এস্টেট পোর্টাল বিপ্রপার্টি’র তথ্যমতে, ঢাকায় এই মুহূর্তে প্রায় দেড়লাখ ভবন রয়েছে। যেখানে ফ্ল্যাটের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ। যদি প্রত্যেক পরিবারে পাঁচজন করেও সদস্য থাকে সেক্ষেত্রে ৯ লাখ ফ্ল্যাটে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ বাস করে।
বাংলা/এনএস
আপনার মন্তব্য লিখুন