অনির্ধারিত এক ঝটিকা সফরে ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ১৮ আগস্ট, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। এই সফর নিয়ে বাংলাদেশ সরকার কিছু না বলেও দেশে মেগা প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগের প্রেক্ষাপটে শ্রিংলার এই বলে জানিয়ে ভারতের গণমাধ্যম।
‘চায়নাস তিস্তা প্লানস: ফরেন সেক্রেটারি লাইকলি টু ভিজিট বাংলাদেশ টুডে’ শিরোনামে এমন খবর প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
এতে বাংলাদেশের তিস্তা নির্ভর সেচ বা কৃষি প্রকল্পে চীন ১০০ কোটি ডলার সহায়তা করবে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন কল্লোল ভট্টাচার্য।
ওই প্রতিবেদনে কল্লোল ভট্টাচার্য লিখেছেন, তিস্তায় সেচ প্রকল্পে চীনের কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলারের সহায়তা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে পানিবন্টন বিষয়ক সমঝোতার কেন্দ্রে রয়েছে এই তিস্তা। এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রীষ্ম মৌসুমে তিস্তায় পানির লেভেল আশানুরূপ পর্যায়ে রাখতে সহায়ক হবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভারতের সঙ্গে পানি বন্টন চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে ব্যর্থতার পর চীনের সঙ্গে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ সরকারের সূত্রগুলো অনলাইন ইউরেশিয়া ভিউ’কে জানিয়েছেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ আসছে তাকে সামনে রেখে মঙ্গলবার এক দিনের জন্য ঢাকা সফরে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। আর এই সঙ্গে ওই ইস্যুগুলো সামনে চলে এসেছে।
ইউরেশিয়াভিউ’র বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদেন বলা হয়, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা রংপুরে ‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট এন্ড রিস্টোরেশন প্রকল্প’ বাস্তবায়নে ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াইয়ে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি আটকে আছে। এক্ষেত্রে চীনের এই ঋণ হবে সম্পর্কের ‘ল্যান্ডমার্ক’, কারণ, এতে ভারত-বাংলাদেশ তিস্তার পানি বন্টন চুক্তির পরিণতিকে সিল করে দেবে।
আরো বলা হয়, তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত একটি বিশাল প্রজেক্টে চীনের অর্থায়ন মেনে নেয়া হয়েছে। এতে অর্থ সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে চীন। বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যমকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন, আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা এই প্রকল্প শুরু করতে পারবো।
দ্য হিন্দু আরো জানায়, ডিসেম্বর ও মে মাসে তিস্তা নদীতে পানির স্তর বেশি রাখার জন্য বৃহত্তর একটি শেয়ার দাবি করছে বাংলাদেশ। এ সময়ে পানির স্তর শুকিয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষিকাজ কঠিন হয়ে পড়ে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার বার উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও এই তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভারত সরকার তার প্রতিশ্রুত এই ‘ল্যান্ডমার্ক চুক্তি’কে সামনে এগিয়ে নিতে পারেনি।