করোনাভাইরাসের প্রাণঘাতী মহামারীর প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে সৌদি আরবে। যে কারণে ২৫টি দেশের নাগরিকদের ওপর সেখানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও।
কিছু শর্তসাপেক্ষে এসব দেশের নাগরিকদের দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে সৌদি সিভিল এভিয়েশন জেনারেল অথরিটি। তবে কবে থেকে তারা সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন, তা এখনো জানানো হয়নি। টানা কয়েকদিন ধরে সেখানে করোনা শনাক্তের সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে আসায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট।
প্রবেশের অনুমতির তালিকায় থাকা দেশগুলো হল— সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইন, লেবানন, কুয়েত, মিশর, তিউনিসিয়া, মরক্কো, চীন, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, গ্রিস, বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, ইথিউপিয়া, কেনিয়া, নাইজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।
এসব দেশের নাগরিকদের কিছু শর্ত পূরণ করে সৌদি আরবে প্রবেশ করতে হবে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. সৌদি আরব ভ্রমণ করতে হলে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে একটি ফরম পূরণ করে তার মধ্যে বিস্তারিত তথ্য লিখে নিচে স্বাক্ষর করতে হবে এবং আসার সময় এয়ারপোর্টে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ডেস্কে জমা দিতে হবে।
২. ভ্রমণ করার সাতদিন আগে থেকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। মূলত পিসিআর দেওয়ার চারদিন আগে থেকে এবং পিসিআর রিপোর্ট পাওয়ার তিনদিন পর পর্যন্ত।
৩. সৌদি আরবের টাটামন এবং তাওয়াক্বালনা অ্যাপস ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে হবে।
৪. অবশ্যই আসার আট ঘণ্টার মধ্যে টাটামন অ্যাপের মাধ্যমে বাসার অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে।
৫. কোভিড-১৯ এর লক্ষণ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। যদি কোনও লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে সরাসরি ৯৩৭ নম্বরে ফোন করতে হবে অথবা সাধারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
৬. টাটামন অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের স্বাস্থ্যের অবস্থা জানাতে হবে এবং কোয়ারেন্টাইন থাকাকালীন সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত ফরম অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
করোনার কারণে চলতি বছরের পবিত্র হজ সীমিত আকারে পালন করেছে সৌদি আরব। এর পরবর্তী সময়ে সেখানকার করোনা পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমছে। বিপরীতে বেড়ে চলেছে সুস্থতার হার।
গত কয়েকদিনে ধারাবাহিকভাবে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে এসেছে। গতকাল ২ সেপ্টেম্বর, বুধবারও মাত্র ৮১৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিন ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে মোট তিন লাখ ১৭ হাজার ৪৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন হাজার ৯৫৬ জন মারা গেছেন। বিপরীতে ২ লাখ ৯২ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন করোনারোগীর সংখ্যা ২১ হাজার ২০ জন, যাদের এক হাজার ৫২৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আপনার মন্তব্য লিখুন