পুলিশের হাতে অসহায় কৃষ্ণাঙ্গ যুবক ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্র উত্তাল হয়ে উঠছে। বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আর এর সাথে চলছে চরম নৈরাজ্য। আসছে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের খবরও।
৩০ মে, শনিবার মধ্যরাতে মিনিয়াপোলিস এলাকার একটি ব্যাংক এবং একটি পোস্ট অফিসের ভবনের শীর্ষ থেকে ধোঁয়া ও আগুনের শিখা উঠছিলো। আর সে সময়ে মিনিয়াপোলিস মুদি দোকানের মালিক সোমালিয়ান মোহাম্মদ আব্বীর চোখে ভাসছিলো ভয়াবহ বিপদের পূর্বাভাস। কারণ তিনি দেখতে পান একদল বিপজ্জনক লুটেরা তার তাওয়াকাল হালাল মুদি দোকান জ্বালিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও শেষাবধি তিনি রক্ষা করতে পেরেছেন তার জীবিকার সম্বল।
তিনি শনিবার সকালে লুটেরাদের পায়ের ছাপ দেখিয়ে রয়টার্স প্রতিনিধিকে এ ঘটনার বর্ণনা করছিলেন। তিনি লুটেরাদেরকে অনুরোধ করে বলেছিলেন, ‘এটি আমার ব্যবসা, এটি আমার বিল্ডিং, দয়া করে এটি করবেন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি চিৎকার করিনি, আমি শান্ত ছিলাম। আমি তাদের বলেছিলাম যে আমি তাদের কোন ক্ষতি করিনি। এবং পরে তারা চলে গেছে।’
মিনিয়াপলিস আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সোমালি সম্প্রদায় রয়েছে। আব্বি বলেছিলেন যে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দু’জন বন্ধু এবং গ্রাহকরা সারা রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন।
সংবাদ সূত্র বলছে, শনিবার দিনব্যাপী ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্থ এবং ধ্বংস হওয়া দোকানের ভাঙা কাচ এবং ধ্বংসাবশেষকে পরিষ্কার করে সেখানে আপাতত ব্লক দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবীরা আব্বির স্টোর এবং আশেপাশের অন্যান্য ব্যবসায়গুলিতে উন্মুক্ত উইন্ডোগুলিতে বোর্ড লাগিয়ে সহিংসতার আরো একটি রাতের জন্য প্রস্তুত হন।
আব্বি যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে চলা এ নৈরাজ্য দেখে ১৬ বছর আগে ২০০৪ সালে সোমালিয়ায় ঘটে চলা তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার তুলনা করছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমি (এখানে) যা দেখেছি তা সোমালিয়ায় যা দেখেছিলাম তার চেয়ে ভয়াবহ ছিলো।’ ২০০৪ সালে আব্বি তার যুদ্ধবিধ্বস্ত জন্মভূমি ছেড়ে পালিয়ে আসার কথা মনে করে বলছিলেন, ‘কী ভয়াবহ! কী ভয়াবহ!’
আপনার মন্তব্য লিখুন