করোনাভাইরাস ঠেকাতে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করায় দেশে অভ্যন্তরীণ রুটে সীমিত আকারে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। ১ জুন, সোমবার থেকে পুনরায় বিমান চলাচল শুরু করা হয়। বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুরে রুটের বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে মো. মহিবুল হক বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল শুরু করেছি।’ তবে আকাশপথে যাত্রী তুলনামূলক কম হচ্ছে। এ জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তবে আবার যাত্রী হলে ফ্লাইটগুলো যাবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ রুটে পরিচালিত ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিমানবন্দরে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সব যাত্রীকে বিমানে ভ্রমণ করার সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।’
এদিকে পর্যায়ক্রমে বাকি রুটেও ফ্লাইট চালু করা হবে বলে জানান বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (বেবিচক) এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
এ বিষয়ে মফিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিমানবন্দরে যেসব ব্যবস্থা নিয়েছি এবং বিমান চালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে যে নির্দেশনা দিয়েছি তা যথাযথভাবে অনুসরণ করে যাত্রীরা যাতে সব স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করেন সেটি আমরা মনিটর করছি।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘আজ থেকে ফ্লাইট শুরু করেছি। তিনটি রুটে সকাল ও বিকালে দুটি করে ফ্লাইট চলবে।’
তিনি জানান, আজ সকালে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট আটজন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর যায় এবং সৈয়দপুর থেকে ২০ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসে। তবে আজকে ঢাকা থেকে সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটে যাত্রী না হওয়ায় বিমানের কোনো ফ্লাইট সেখানে যায়নি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (পিআর) কামরুল ইসলাম জানান, তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ছয়টি, ঢাকা-সিলেটে একটি ও ঢাকা-সৈয়দপুরে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছেন। এসব রুটে আসা-যাওয়া করবে মোট ২০ ফ্লাইট।
তিনি আরো বলেন, ‘বেবিচকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ ৬৫ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করছি। যদি এক পরিবারের বাচ্চাসহ একাধিক সদস্য থাকেন তাহলে তারা শুধু এক সাথে বসতে পারবেন। অন্য যাত্রীদের দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হচ্ছে। যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা এবং মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরা নিশ্চিত করে তারপর ফ্লাইটে বসতে দিচ্ছি আমরা।’
প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলু হলেও আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহনের নিয়মিত ফ্লাইটের ক্ষেত্রে চলমান নিষেধাজ্ঞা ১৫ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত বহাল আছে। এ নিষেধাজ্ঞা আগের মতো বাহরাইন, ভুটান, হংকং, ভারত, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইউএই ও ইউকের সাথে বিদ্যমান রুটে কার্যকর রয়েছে। তবে কার্গো, ত্রাণ সাহায্য, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি অবতরণ ও বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার কার্যক্রম চালু থাকবে।
বাংলা/এনএস