কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে শতকের পর শতক ধরে চলে আসা বর্ণবাদকে ‘আমেরিকার মহামারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী জর্জ ক্লুনি। এই মহামারীর টিকা উদ্ভাবনে মার্কিনিরা ব্যর্থ হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
গত ২৬ মে, সোমবার দেশটির মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনেয়াপোলিসে পুলিশের হাতে আটক হন জর্জ ফ্লয়েড নামের ওই ব্যক্তি। এসময় একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য তার গলায় হাঁটু চেপে ধরলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান ৪৬ বছর বয়সী আফ্রিকান-আমেরিকান নাগরিক ফ্লয়েড। এ ঘটনার জেরে সারা দেশে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দেশটির বিভিন্ন শহরে সহিংস বিক্ষোভ চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যম দ্য ডেইলি বিস্ট’এ লেখা এক নিবন্ধে এমন কথা উল্লেখ করেন ক্লুনি।
কলামে বর্ণবাদের মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট না দেওয়ারও আহ্বান জানান। দেশে মারাত্মক রূপ নেয়া বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার উল্লেখ করে ক্লুনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব, ফৌজদারি বিচার ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পরিকল্পিত পরিবর্তন আনতে হবে।’
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে তবে বিক্ষোভে অংশ নেয়া মার্কিনিদের প্রশংসার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে যারা এ আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছেন তাদেরও প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করা হয়েছে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। চার পুলিশ কর্মকর্তার হাতে যখন তিনি নিহত হন, সেই দৃশ্য আমরা দেখেছি।’
ক্লুনি বলেন, ‘কখন এই বিক্ষোভ দমে যাবে, তা আমি জানি না। আমরা প্রত্যাশা করছি, ভবিষ্যতে আর কেউ এভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হবেন না। কিন্তু আমরা এটা জানি যে, পরিবর্তন খুবই কম আসবে। রাস্তায় যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখেছি, তা মনে করিয়ে দিচ্ছি– দাসত্বের আদি পাপ থেকে আমাদের দেশ কতটা কম বেরিয়ে আসতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু এই সংকট আমরা তৈরি করেছি, এর সমাধানও আমাদের করতে হবে। এটা আমাদের মহামারী। যা আমাদের সবার ওপর হানা দিয়েছে। গত চারশ বছর ধরে যার কোনো টিকা খুঁজে পাচ্ছি না।’
এই মহামারীর একটি টিকা বের করার চেষ্টার পরেও মার্কিনিরা থেমে গেছে বলেও মনে করেন ক্লুনি। তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্রভাবে আমরা এই সমস্যার সমাধান বের করতে চেষ্টা করছি। আমরা নিশ্চিত যে আমরা ভালো কিছু করতে পারিনি।’
বাংলা/এসএ/