দেশে ফেরার পর নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে হজ ক্যাম্পে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। যদিও তার দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার সনদও রয়েছে। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি। করোনায় আক্রান্ত দেশের মানুষকে সেবা দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের মাটিতে এসেছেন ডা. ফেরদৌস।
রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত নিজ বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পাননি ডা. ফেরদৌস। তাকে হজ ক্যাম্পের সাততলায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আমেরিকার মেডিক্যাল সেন্টারে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার সনদ দেখানোর পরও কর্তৃপক্ষ তাকে বাড়ি যেতে দেয়নি।
এ বিষয়ে ডা. ফেরদৌস জানান, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমিও জানি, কাদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে হয়। কিন্তু আমার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তার মানে কোনো না কোনোভাবে আমি এখন করোনা প্রতিরোধী, নিশ্চয়ই চিকিৎসকরা বিষয়টি ভালো বোঝেন। আর অ্যান্টিবডির সনদও আমি দেখালাম। তারপরও আমাকে হজ ক্যাম্পে প্রায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে! এটি কেন করা হচ্ছে আমি জানি না।
তিনি আরো বলেন, আমিতো কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বাংলাদেশে আসিনি। এসেছি মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য। করোনাকালে একটি দিন আমার কাছে একটি মাসের মতো। এখন একটি দিন আগে পেলে মানুষের সেবায় দিনটি আমি ঢেলে দেব। কিন্তু ১৪ দিন এখানে থাকতে হলে দেশের মানুষের জন্য আমি অনেক কিছুই করতে পারবো না। এখানে যেভাবে আমাকে রাখা হয়েছে, সেটি অনেক হতাশার, অপমানের।
ডা. ফেরদৌস আরো জানান, দিনের পর দিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ করতে গিয়ে হলছাড়া ছিলাম, কতবার হামলার শিকারও হয়েছি। সেই আমাকে একদিনের মধ্যে বানিয়ে ফেলল আমি নাকি ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি? আমার ছোট্ট পরিবারটিকে খুনি মোস্তাক আর কর্নেল রশিদের স্বজন বানিয়ে ফেললো! বঙ্গবন্ধুর খুনিদের স্বজন তো দূরের কথা, আমার বংশের কারো সঙ্গে খুনি পরিবারের কোনো আত্মীয়তা নেই। তরপরও কারা আমাকে একের পর এক মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে? কেন আমার চরিত্র হরণে মরিয়া হয়ে উঠেছে?
এই চিকিৎসক আরো জানান, অ্যান্টিবডি সনদ থাকার পরও কী কারণে এভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে? ৩০ বছর বছর আমাকে এখন প্রমাণ করতে হচ্ছে, আমি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মানুষ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমার পরিবার খুনি মোস্তাকের পরিবারের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই!! আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে আমার নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই ষড়যন্ত্রের আমি বিচার চাই।
নিউ ইয়র্ক থেকে আসা ডা. ফেরদৌস বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যাচার করা হচ্ছে এবং যেভাবে আমার চরিত্রে কালিমা লেপন করা হচ্ছে সেটি খুবই পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। কারা এমনটি করছে, কেন করছে- নেত্রী যেন সঠিক তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই।
বাংলা/এনএস
