বিশ্বব্যাপী নতুন করে মানবিক মূল্যবোধের প্রতিনিধি হয়ে ওঠা কৃষাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তার এই শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে ফ্লয়েডের জীবনের নানাদিক তুলে ধরে তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
একজন বাবা, ভাই, অ্যাথলেট এবং পরামর্শদাতা হিসাবে জর্জ ফ্লয়েডকে সকলেই শ্রদ্ধা, ভালবাসায় সম্মানিত করেছেন। তার শৈশবের শহর টেক্সাসের হিউস্টনের একটি গির্জায় মায়ের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করেন। এ সময় লোকজন উপচে পড়েন।
এ সময় ফ্লোয়েডের ভাই রডনি ফ্লোয়েডের শোকের ষষ্ঠ ও শেষ দিনে গির্জার সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটু দূরে কুনি হোমস, সেখানেই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে প্রত্যেকে তাকে বিশ্বজুড়ে মনে রাখবে। তিনি বিশ্বপরিবর্তন করতে চলেছেন।’
ফ্লয়েডের শেষকৃত্যের সময়ে রেডিও স্টেশনগুলো নীরবতা পালন করেছে। নগর কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। নিউইয়র্কে স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ীরা আট মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের জন্য লেনদেন বন্ধ রাখে। কারণ এ সময় ধরে মিনিয়াপলিসের পুলিশ অফিসার ডেরেক চৌভিন ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরে রেখেছিলে। আর তখন শ্বাস নিতে না পেরে তিনি মারা যান।
২৫ শে মে তাকে হত্যা করার সময়ে একজন পথচারীর করা ভিডিও বিশ্বজুড়ে কয়েক মিলিয়ন মানুষ দেখেছেন এবং ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’ বলে জর্জ ফ্লয়েডের আকুতির কথা শুনেছি।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় ফ্লোয়েডের ভাতিজি ব্রুক উইলিয়ামস তার আঙ্কেলকে ‘আধ্যাত্মিকভাব শুদ্ধ একজন কর্মী’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার নাম ব্রুক উইলিয়ামস। জর্জ ফ্লয়েডের ভাতিজি এবং আমি শ্বাস নিতে পারছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘যতক্ষণ না আমি প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারছি ততক্ষণ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যাবে না।’
গির্জার বাইরে ‘আমি শ্বাস নিতে পারি না’ এবং ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ পরা টি শার্ট পরে কয়েক ডজন লোক তাদের প্রতিবেশী ফ্লয়েডকে সম্মান জানাতে জড়ো হয়েছিল।
৩৫ বছর বয়সী সাওয়ান্ত মুর বলেছিলেন, ‘তাকে যেভাবে মারা হয়েছে তাতে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে পারেননি। আবার এমনটা ঘটবে না তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।’
বাংলা/এনএস