মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট তার বার্ষিক আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা (আইআরএফ)’র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাতে বিশ্বজুড়ে ধর্মীয়ভাবে স্বাধীনত রাষ্ট্রের সমীক্ষা রয়েছে। সম্প্রতি এই প্রতিবেদনটি মার্কিন কংগ্রেসে জমা দেয়া হয়। এমন খবর প্রকাশ করেছে দ্য হিন্দু।
ভারতের জন্য দেশটির প্রতিবেদেন যেসকল বিষয়ে আলোচনা করা হয় তা হলো, ২০১৯ সালে ভারতে জম্মু ও কাশ্মীরের অবস্থা, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি)। এছাড়াও ভারতে গণহত্যা, ধর্মপরিবর্তন বিরোধী আইনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
এনজিও এবং গণমাধ্যম সূত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ধর্মীয় গোষ্ঠী দ্বারা অনুপ্রাণিত গণ সহিংসতা, বিনা বিচারে হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিষয়গুলো কখনো কখনো আইন প্রণেতারা অস্বীকার বা উপেক্ষা করতেন।’
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘ভারতীয় জনতা পার্টিসহ (বিজেপি) হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কিছু নেতা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জনগণের সামনে উত্তেজনাকর বক্তব্য দিয়েছেন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এ সংক্রান্ত পোস্ট করেছেন।’
প্রতিবেদনটিতে, গরু নিয়ে ভারতের উগ্রতা এবং অন্যান্য ধরণের জনতা সহিংসতার ঘটনাবলির বিবরণ দেয়া হয়েছে। যেমন- গত বছর ঝাড়খণ্ডের তাবরেজ আনসারির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের বাবরি মসজিদের সিদ্ধান্ত। সাবরিমালা মন্দিরে মহিলা প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার, এর বিপরীতে ২০১৮ সালের চ্যালেঞ্জ করার মতো ঘটনাগুলো ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
একই সঙ্গে এই ইস্যুতে ভারতের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পর্ক তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনটিতে। গত ৪ জুন, বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াল ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)- একটি স্বাধীন দ্বিদলীয় কমিশন এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতার অফিস থেকে পৃথক। এপ্রিল মাসে, এটি পররাষ্ট্রসচিব মাইকেল পম্পেওর কাছে সুপারিশ করেছিল। সেই সুপরিশে বলা হয়, স্টেট ডিপার্টমেন্ট যাতে কান্ট্রি অব পার্টিকুলার কনসার্ন (সিপিসি)’র ভিত্তিতে ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সর্বনিম্ন গ্রেডে নামিয়ে আনে। তবে পম্পেও তা মানেননি।
প্রসঙ্গত, এই মাসের শুরুর দিকে, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)’কে নির্দেশ দেন যে বার্ষিক বাজেটে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রচারের লক্ষ্যে কর্মসূচী খাতে ৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হবে।
বাংলা/এসজে