এটা খুবই আশাব্যঞ্জক খবর। যদিও করোনার এমন মহামারী আমাদের নতুন করে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে বিশ্বব্যাপী সংক্রামক রোগ এবং ভ্যাকসিন গবেষণায় আমরা কতটা পিছিয়ে পড়েছি! সংক্রামক রোগ নিয়ে তাই আমাদের নতুন করে, নতুন উদ্যমে কাজ করার সময় এসেছে ।
বিশ্বব্যাপী সংক্রামক রোগের একটা বড় ক্ষেত্র হলো মশা দ্বারা সংক্রামিত রোগজীবাণু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, শুধু ম্যালেরিয়াতেই প্রতি বছর ৪ লাখ লোক মারা যায়। এই মৃত্যুর বেশিরভাগ দরিদ্র দেশগুলোতে ঘটে থাকে। এছাড়া মশাবাহিত ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, ইয়োলো ফিভার, মায়ারো ভাইরাস ইত্যাদির কারণে অনেক মানুষ প্রতি বছর মারা যায়।
মশাবাহিত এসব রোগের অদ্যবধি কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু সহকর্মী এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীদের কাজের ওপর ভিত্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগের ক্লিনিকাল গবেষক ম্যানিং এ ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি মশাবাহিত রোগের জীবাণু নয়, বরং মশার লালা থেকে মশাবাহিত সকল রোগের জন্য সর্বজনীন একটা ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করেন। এজন্য তিনি মশার লালা হতে পাওয়া প্রোটিন ব্যবহার করেছেন।
গতকাল ল্যানসেট ম্যানিং ও তার সহকর্মীদের উদ্ভাবিত মশার লালা থেকে তৈরি টিকার প্রথমবারের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করেছে। রয়টার্স পরিবেশিত প্রতিবেদনে এমন দাবী করা হয়েছে।
ওই পরীক্ষায় দেখা গেছে, একটি অ্যানোফিলিস মশার লালা থেকে যে ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে সেটা মানুষের উপরে ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এটি নিরাপদ ছিলো এবং এটি অ্যান্টিবডি এবং মানুষের কোষের প্রতিক্রিয়াকে বাড়িয়ে তুলেছিল।
এই গবেষণার প্রধান ম্যানিং বলেন, ‘আমাদের আরো উদ্ভাবনী সরঞ্জামের প্রয়োজন। এর মতো একটি ভ্যাকসিন হবে ‘হলি গ্রিল’।’
গবেষক মাইকেল ম্যাকক্র্যাকেন এই গবেষণায় জড়িত নন। তবে এই প্রাথমিক ফলাফলকে ‘মৌলিক’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
মেরিল্যান্ডের ওয়াল্টার রিড আর্মি ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ’এ মশার বাহিত ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে অধ্যয়নরত ম্যাকক্র্যাকেন বলেছিলেন, ‘এটি বিশাল একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মশা যুক্তিযুক্তভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক প্রাণী।’
বাংলা/এনএস